66b46bc05fd5e09752c43670
বিগ ফাইভ
নেতিবাচকভাব (Neuroticism)
নিউরোটিসিজম হলো নেতিবাচক অনুভূতি অনুভব করার প্রবণতা।
নিউরোটিসিজম বা নেতিবাচকভাবে আপনার পয়েন্ট কম, এটা দেখায় আপনি খুব শান্ত, ঠান্ডা মাথা আর সবসময় নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকেন। এমনকি যে পরিস্থিতিগুলোকে অনেকে চাপের বলে মনে করে, সেখানেও আপনি কোন তীব্র অনুভূতি প্রকাশ করেন না।
উদ্বেগ
উদ্বেগপ্রবণ ব্যক্তিদের মাথায় যে "লড়াইয়ের বা পালানোর" ব্যবস্থা আছে, সেটা খুব সহজে এবং ঘনঘন চালু হয়ে যায়। তাই যারা উদ্বেগে বেশি ভোগেন, তারা সবসময় ভয়ঙ্কর একটা কিছু ঘটবে বলে মনে করেন। তারা হয়তো কোন একটি নির্দিষ্ট অবস্থা বা পরিস্থিতি নিয়ে ভয়ে থাকেন কিংবা সবসময় এমনিতেই ভীত থাকেন। তারা টেনশন, অস্থিরতা এবং নার্ভাসনেস অনুভব করেন। উদ্বেগে কম স্কোর পাওয়া ব্যক্তিরা সাধারণত শান্ত এবং নির্ভীক হয়ে থাকেন।
রাগ
যারা রাগে বেশি পয়েন্ট পেয়ে থাকেন, তারা তাদের পছন্দমত কোন কিছু না পেলে খুব রেগে যান। তারা ন্যায়সঙ্গত আচরণ চান এবং প্রতারিত হলে রাগ আর তিক্ততা অনুভব করেন। এই স্কেল রাগ অনুভবের প্রবণতা দেখায়; কেউ তার রাগ প্রকাশ করবেন কিনা তা তার সহযোগিভাব স্তরের উপর নির্ভর করে। যারা কম পয়েন্ট পেয়ে থাকেন, তারা সহজে রাগেন না।
হতাশা
এই স্কেল দুঃখ, হতাশা, আর নিরুৎসাহ বোধ করার প্রবণতা মাপে। যারা বেশি স্কোর পেয়ে থাকেন, তারা অলসতা থেকে বের হতে পারেন না এবং নতুন কিছু শুরু করতে তাদের সমস্যা হয়। কম স্কোর পাওয়া ব্যক্তিরা এই ধরনের মন-খারাপ করা অনুভূতিগুলো থেকে মুক্ত থাকেন।
আত্ম-সচেতন
আত্ম-সচেতন লোকেরা অন্যরা তার ব্যাপারে কী ভাবছে তা নিয়ে খুব চিন্তিত থাকেন। প্রত্যাখ্যান আর উপহাসের ভয়ে তারা অন্যদের সাথে থাকতে লজ্জা আর অস্বস্তি বোধ করেন। তারা সহজেই লজ্জা পেয়ে থাকেন এবং প্রায়শই লজ্জিত হন। তাদের মনে হয় অন্যরা তাদের নিয়ে ঠাট্টা করবেন বা সমালোচনা করবেন। যদি এটা বাস্তব নাও হয়, কিন্তু তাদের অস্বস্তি আর আড়ষ্টতা এটাকে সত্যি করে তোলে। কম স্কোর পাওয়া লোকেরা এই ধারণায় ভোগেন না যে সবাই তাদের দেখছেন এবং বিচার করছেন, আর তারা সামাজিক পরিস্থিতিতে নার্ভাস হয়ে পড়েন না।
অসংযমী
অসংযমী মানুষগুলো তীব্র ইচ্ছা ও চাহিদার তাড়না অনুভব করেন, যা তাদের পক্ষে সামলানো কঠিন হয়। তারা দীর্ঘমেয়াদী ফলাফলের বদলে স্বল্পমেয়াদী আনন্দ এবং পুরস্কারের প্রতি বেশি ঝোঁক অনুভব করেন। কম স্কোর পাওয়া মানুষেরা জোরালো ইচ্ছার শিকার হন না আর তাই বেশি মাত্রায় উপভোগ করার তীব্র ইচ্ছা জাগে না।
দুর্বলতা
যারা দুর্বলতায় বেশি পয়েন্ট পেয়ে থাকেন, তারা চাপ ও বিপদের মুখে পড়লে ঘাবড়ে যান, বিভ্রান্ত হন এবং কিছু করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। কম পয়েন্ট পাওয়া লোকেরা চাপের সময়ও শান্ত, আত্মবিশ্বাসী আর ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করতে পারেন।
বহির্মুখিতা (Extraversion)
বহির্মুখিতা হলো বাইরের দুনিয়ার সাথে বেশি মাত্রায় জড়িত বা সম্পৃক্ত থাকা।
আপনার বহির্মুখিতা স্কোর বেশি, মানে আপনি মিশুক, বহির্মুখী, উদ্যমী এবং প্রাণবন্ত। আপনি বেশিরভাগ সময় মানুষের সাথে থাকতে পছন্দ করেন।
বন্ধুসুলভ
বন্ধুসুলভ লোকেরা অন্যদের পছন্দ করেন এবং অন্যদের প্রতি তাদের ভালো লাগার অনুভূতি প্রকাশ করেন। তারা সহজে বন্ধু তৈরি করেন এবং চাইলে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়তে পারেন। বন্ধুত্বের দিক থেকে যারা কম স্কোর পায়, তারা গম্ভীর মেজাজের বা শত্রুভাবাপন্ন না হলেও, অন্যদের সাথে বেশি মেশেন না বলে তাদেরকে অনেক সময় দূরত্ব বজায় রেখে চলতে চাওয়া এবং চাপা স্বভাবের মনে হয়। এরা মূলত বন্ধুত্ব বা আন্তরিক সম্পর্কের ব্যাপারে উদাসীন।
সামাজিকতাপ্রিয়
সামাজিকতাপ্রিয় মানুষদের কাছে অন্যদের সঙ্গ আনন্দদায়ক। তারা ভিড়ের উত্তেজনা উপভোগ করে। অন্যদিকে, যারা কম স্কোর পায়, তারা প্রায়ই লোকজনের ভিড়ে অস্বস্তি বোধ করে এবং বেশি ভিড় এড়িয়ে চলে। তারা সবসময় মানুষের সাথে থাকতে অপছন্দ করে না, কিন্তু তাদের একাকী সময় আর নিজস্বতা অনেক বেশি প্রয়োজন।
দৃঢ়তা
অ্যাসারটিভনেস বা দৃঢ়তায় উচ্চ স্কোরকারী মানুষরা দৃঢ়ভাবে কথা বলতে, নেতৃত্ব প্রদান করতে আর অন্যদের নির্দেশ দিতে পছন্দ করেন। তারা সাধারণত দলের নেতা হয়ে থাকেন। যারা কম স্কোর পায়, তারা কম কথা বলেন আর অন্যদের দলের কাজ চালানো মেনে নেন।
সক্রিয়তার মাত্রা
এই স্কেলে বেশি পয়েন্ট পাওয়া সক্রিয় মানুষরা দ্রুত গতির, ব্যস্ত জীবনযাপন করেন। তারা অনেক কিছুতেই নিজেদের জড়িত রাখেন। যারা এই স্কেলে কম নম্বর পেয়ে থাকেন, তারা ধীর গতির জীবনযাপন করেন এবং বেশি রিল্যাক্সড থাকেন।
উত্তেজনা অনুসন্ধান
যারা এই স্কেলে বেশি পয়েন্ট পেয়ে থাকেন, তারা অনেক উত্তেজনা ছাড়া সহজেই বিরক্ত হয়ে পড়েন। তারা ঝলমলে আলো আর হইচইপূর্ণ পরিবেশ পছন্দ করেন। তারা ঝুঁকি নিতে আর মজা খুঁজতে পছন্দ করেন। অন্যদিকে, যারা কম পয়েন্ট পেয়ে থাকেন- তারা কোলাহল আর হৈচৈ-এ বিরক্ত হয়ে পড়েন, আর রোমাঞ্চকর কাজ-কর্ম এড়িয়ে চলেন।
প্রফুল্লতা
এই স্কেল দ্বারা নিউরোটিসিজমের অন্তর্গত নেগেটিভ ইমোশনগুলি বাদ দিয়ে, কেবল ভালো মুড আর অনুভূতিগুলো পরিমাপ করা হয়। যে ব্যক্তিরা এই স্কেলে উচ্চ স্কোর করেন - তারা সাধারণত খুশি, উদ্দীপনা, আশাবাদ এবং আনন্দসহ বিভিন্ন ইতিবাচক অনুভূতি অনুভব করেন। যারা কম পয়েন্ট পেয়ে থাকেন - তারা এই ধরনের এনার্জেটিক, উচ্ছ্বসিত অনুভূতির প্রবণতা কম দেখান।
অভিজ্ঞতা অর্জনে ইচ্ছা (Openness To Experience)
অভিজ্ঞতা অর্জনে ইচ্ছা বলতে নতুন কোন কিছু গ্রহণের ক্ষেত্রে কতটা উন্মুক্ত মন মানসিকতা আছে তা বোঝায়। এটি মানুষের চিন্তাধারার একটা দিক, যা কল্পনাপ্রবণ ও সৃজনশীল একজন মানুষকে বাস্তববাদী ও প্রথাগত চিন্তাধারার অন্য সবার থেকে আলাদা করে।
অভিজ্ঞতা অর্জনে ইচ্ছা (Openness To Experience)-তে আপনার স্কোর কম, যা ইঙ্গিত করে আপনি সহজ-সরল পদ্ধতিতে চিন্তা করতে পছন্দ করেন। অন্যরা আপনাকে বাস্তববাদী, কাজের মানুষ, এবং রক্ষণশীল হিসেবে চিনে থাকেন।
কল্পনা
কল্পনাশীল মানুষদের কাছে এই বাস্তব দুনিয়া বেশিরভাগ সময় বোরিং এবং সাদামাটা লাগে। যারা এই স্কেলে বেশি পয়েন্ট পেয়ে থাকেন, তারা ফ্যান্টাসির মাধ্যমে একটি আকর্ষণীয় ও মজার জগৎ গড়ে তোলেন। অন্যদিকে, যাদের স্কোর কম, তারা কল্পনার চেয়ে বাস্তবিকতায় বেশি মন দিয়ে থাকেন।
শিল্পকলায় আগ্রহ
যারা এই স্কেলে বেশি নম্বর পেয়ে থাকেন, তারা সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন, সেটা শিল্পকলায় বা প্রাকৃতিক – যে মাধ্যমেই হোক। তারা সহজেই শিল্প এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মগ্ন হয়ে যান। তারা অনেকেই শিল্পকলায় দক্ষ বা প্রতিভাবান হতে পারেন, তবে সবাই নন। এই স্কেলের নির্ধারণী বৈশিষ্ট্য হল, প্রাকৃতিক এবং মানব-সৃষ্ট সৌন্দর্যের প্রতি আগ্রহ এবং তা পছন্দ করা। নিম্ন স্কোরকারীগণ শিল্প ও সৌন্দর্যের প্রতি তেমন একটা সংবেদনশীল বা আগ্রহী থাকেন না।
আবেগিয়তা
ইমোশনালিটি বা আবেগিয়তার দিক থেকে যারা ভালো স্কোর পেয়ে থাকেন, তারা নিজের অনুভূতিগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন এবং বুঝতে পারেন। যারা কম স্কোর পান, তারা তাদের অনুভূতি সম্পর্কে তুলনামূলক কম সচেতন থাকেন এবং সাধারণত তাদের ইমোশন/আবেগ প্রকাশ করতে চান না।
অভিযানপ্রিয়তা
যারা অ্যাডভেঞ্চারাসনেস বা অভিযানপ্রিয়তায় ভালো স্কোর পেয়ে থাকেন, তারা নতুন কিছু ট্রাই করতে, দেশ-বিদেশে ঘুরতে, এবং নানা অভিজ্ঞতা নিতে উৎসাহী থাকেন। তাদের কাছে নিত্যনৈমিত্তিক রোজকার একই রুটিন বিরক্তিকর লাগে। এটাতে যারা কম নম্বর পেয়ে থাকেন, তারা পরিবর্তনে অস্বস্তি বোধ করেন এবং পরিচিত রুটিনকেই বেশি পছন্দ করেন।
বুদ্ধিবৃত্তি
বুদ্ধিবৃত্তি আর শৈল্পিক বিষয়ে আগ্রহ হলো অভিজ্ঞতার প্রতি উন্মুক্ততা বা Openness to experience–র দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। যারা বুদ্ধি স্কেলে বেশি নম্বর পেয়ে থাকেন, তারা আইডিয়া নিয়ে খেলা করতে ভালোবাসেন। তারা নতুন আর অদ্ভুত ধারণা শুনতে আগ্রহী এবং বুদ্ধিবৃত্তিক বিষয় নিয়ে বিতর্ক করতে পছন্দ করেন। তারা ধাঁধা, পাজল আর মগজের খেলা উপভোগ করেন। যারা কম নম্বর পেয়ে থাকেন, তারা আইডিয়ার চেয়ে মানুষজন বা জিনিসপত্র নিয়ে কাজ-কারবার করতে বেশি পছন্দ করেন। তারা বুদ্ধির ব্যায়ামকে সময়ের অপচয় মনে করেন।
মনস্তাত্ত্বিক উদারতা
মনস্তাত্ত্বিক উদারতা হলো কর্তৃপক্ষ, প্রথা এবং ঐতিহ্যবাহী মূল্যবোধকে চ্যালেঞ্জ করার প্রবণতা। সবচেয়ে চরম অবস্থায়, এটি (মনস্তাত্ত্বিক উদারতা) নিয়মের প্রতি বিরোধিতা, আইন ভাঙার সাথে সহমত পোষণ (আইন ভঙ্গকারীদের প্রতি সহানুভূতিশীলতা), এবং বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থার প্রতি সমর্থনকে প্রতিনিধিত্ব করে। অন্যদিকে, মনস্তাত্ত্বিকভাবে রক্ষণশীলরা পুরনো নিয়ম মেনে চলার মধ্যে নিরাপত্তা আর স্থিতিশীলতা খুঁজে পান। মানসিক উদারতা অথবা রক্ষণশীলতা কোনো ব্যক্তির সরাসরি রাজনৈতিক দলের সাথে সংযুক্ত হওয়ার নিশ্চয়তা দেয় না, তবে এটি (মানসিক উদারতা অথবা রক্ষণশীলতা) কোনো ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের দিকে ঝুঁকতে প্রভাবিত করতে পারে।
সহযোগীভাব (Agreeableness)
সহযোগিতা আর সম্প্রীতির ব্যাপারে মানুষের চিন্তাধারা তার সহযোগীভাবের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। যারা সহযোগিতাপরায়ন, তারা অন্যদের সাথে ভালোভাবে থাকতে পছন্দ করেন।
এই স্কেলে আপনার স্কোর কম, মানে আপনি অন্যদের চাহিদার চেয়ে নিজের চাহিদা নিয়ে বেশি চিন্তা করেন। মানুষ আপনাকে কঠোর, আপসহীন এবং ক্রিটিকাল মনে করে।
বিশ্বাস
যাদের বিশ্বাস বেশি, তারা মনে করে যে অধিকাংশ মানুষ ন্যায়পরায়ণ, সৎ এবং ভালো উদ্দেশ্য সম্পন্ন। যাদের বিশ্বাস কম, তারা অন্যদেরকে স্বার্থপর, ধুরন্ধর এবং সম্ভাব্যভাবে বিপজ্জনক বলে মনে করেন।
নৈতিকতা
এই স্কেলে যারা বেশি নম্বর পেয়ে থাকেন, তারা অন্যদের সাথে আচরণের সময় ভান বা কারসাজি করার প্রয়োজন মনে করেন না এবং তাই তারা খোলামেলা, স্পষ্টভাষী এবং আন্তরিক হয়ে থাকেন। মানুষজন সাধারণত এদের সাথে সহজে সম্পর্ক গড়তে পারেন। যারা কম নম্বর পেয়ে থাকেন, তারা বিশ্বাস করেন যে, সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কিছুটা প্রতারণা করার দরকার হয়ে থাকে। সাধারণত এই স্কেলের কম নম্বর পাওয়া ব্যক্তিদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করা কঠিন হয়। তবে এটি মনে রাখা উচিত যে, এই কম নম্বর পাওয়া ব্যক্তিরা নীতিনৈতিকতাহীন নন; তারা কেবল আরও সাবধানী এবং সব কথা খুলে বলতে চান না।
পরোপকারী
পরোপকারী ব্যক্তিরা অন্যদের সাহায্য করতে অকৃত্রিম আনন্দ পেয়ে থাকেন। তাই, তারা সাধারণত সাহায্যপ্রার্থীদের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে থাকেন। তারা অন্যের জন্য কোন কিছু করাকে আত্মত্যাগ নয়, বরং আত্মতুষ্টির উৎস ভাবেন। অন্যদিকে, এই স্কেলে কম স্কোর পাওয়া ব্যক্তিরা অন্যদের সাহায্য করতে খুব একটা পছন্দ করেন না। তাদের কাছে সাহায্যের অনুরোধ আত্মতুষ্টি লাভের উপায় হিসেবে নয় বরং চাপ বলে মনে হয়।
সহযোগিতা
যারা এই স্কেলে বেশি স্কোর পেয়ে থাকেন তারা ঝগড়া-বিবাদ পছন্দ করেন না। তারা অন্যদের সাথে ভালো থাকতে নিজেদের চাহিদা ত্যাগ করতে বা আপোষ করতে রাজি থাকেন। যারা কম স্কোর পেয়ে থাকেন, তারা অন্যদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে বা চাপ দিয়ে নিজেদের ইচ্ছে মতো কাজ করিয়ে থাকেন।
বিনয়
যারা এই স্কেলে বেশি পয়েন্ট পেয়ে থাকেন, তারা নিজেদেরকে অন্যদের থেকে ভালো বলে দাবি করতে পছন্দ করেন না। কখনো কখনো এই ধরনের মনোভাব কম আত্মবিশ্বাস বা কম আত্মসম্মানবোধ থেকে আসে। তবে অনেক মানুষ আছে যাদের আত্মসম্মানবোধ বেশি, কিন্তু তারা মনে করে অহংকার ভালো নয়। যারা নিজেদেরকে সেরা বলে জাহির করতে চায়, অন্যরা তাদেরকে সাধারণত অহংকারী ভাবে।
সহানুভূতি
এই স্কেলে যারা ভালো স্কোর পেয়ে থাকেন, তারা কোমল হৃদয়ের এবং সহানুভূতিশীল। তারা অন্যের কষ্ট অনুভব করতে পারেন এবং খুব সহজেই করুণা অনুভব করেন। যারা কম স্কোর পেয়ে থাকেন, তারা মানুষের দুঃখ-কষ্টে তেমন প্রভাবিত হন না। তারা যুক্তি দিয়ে নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত নিতে গর্ব বোধ করেন এবং দয়ার চেয়ে সত্য এবং ন্যায়বিচারে বেশি আগ্রহী থাকেন।
কর্মনিষ্ঠা (Conscientiousness)
কনশিয়েন্সিয়াসনেস বা কর্মনিষ্ঠা হলো আমরা আমাদের আবেগকে বা প্রবৃত্তিকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ, পরিচালনা এবং নির্দেশ করি। নিজের কাজ এবং কর্তব্য যথাযথভাবে সম্পাদন করার প্রবণতাই আমাদের যার যার কনশিয়েন্সিয়াসনেস বা কর্মনিষ্ঠা।
আপনার কনশিয়েন্সিয়াসনেস বা কর্মনিষ্ঠায় স্কোর বেশি। যা বোঝায়, আপনি নিজের জন্য স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করেন এবং সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকেন। মানুষ আপনাকে নির্ভরযোগ্য এবং পরিশ্রমী মনে করে।
নিজের কর্ম সম্পাদনের ক্ষমতায় আত্মবিশ্বাস
সেল্ফ-এফিকেসি হলো নিজের কর্ম সম্পাদনের ক্ষমতায় আত্মবিশ্বাস। বেশি পয়েন্ট পাওয়া ব্যক্তিরা বিশ্বাস করেন যে সফলতা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বুদ্ধি বা কমন-সেন্স, উদ্যম এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা তাদের আছে। যারা কম পয়েন্ট পেয়ে থাকেন, তারা নিজেদেরকে কাজকর্মে সফল বলে ভাবেন না এবং মনে করেন তাদের জীবনের উপর নিজেদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
নিয়মনিষ্ঠা
যারা অর্ডারলিনেস বা নিয়মনিষ্ঠার স্কেলে বেশি নম্বর পান, তারা বেশ গোছানো হন। তারা রুটিন মেনে চলতে এবং সময়ের কাজ সময়ে করতে ভালোবাসেন। তারা যেকোনো কাজ লিস্ট করে রাখেন এবং প্ল্যান করে করার করার চেষ্টা করেন। আর যারা কম নম্বর পান, তারা সাধারণত বিশৃঙ্খল ও কিছুটা ছন্নছাড়া হন।
কর্তব্যনিষ্ঠা
এই স্কেলটি একজন ব্যক্তির কর্তব্য এবং দায়িত্ববোধ কতটা শক্তিশালী তা দেখায়। যারা এই স্কেলে বেশি নম্বর পেয়ে থাকেন, তাদের নৈতিক দায়িত্ববোধ খুবই শক্তিশালী। যারা কম নম্বর পেয়ে থাকেন, তারা চুক্তি, নিয়ম এবং বিধিবিধানকে বেশি বাঁধাধরা মনে করেন। অনেকে তাদেরকে অনির্ভরযোগ্য বা দায়িত্বজ্ঞানহীন মনে করেন।
অর্জন প্রচেষ্টা
যারা এই স্কেলে বেশি নম্বর পেয়ে থাকেন, তারা উৎকর্ষ অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন। জীবনের প্রায় প্রতিটি পর্যায়েই একটি স্পষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকে যা তাদের কাজের দিকনির্দেশ দেয়। সফল হওয়ার চাহিদা তাদের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাবার প্রেরণা হিসাবে কাজ করে। কিন্তু খুব বেশি স্কোর অর্জনকারীরা পারিপার্শ্বিকতা ভুলে গিয়ে তাদের কাজে অত্যধিক একমুখী এবং অতিরিক্ত মগ্ন হতে পারেন। যারা কম স্কোর পেয়ে থাকেন, তারা অল্প কাজ করেই খুশি থাকেন এবং এজন্য অন্যদের কাছে অলস হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন।
আত্ম-শৃঙ্খলা
আত্ম-শৃঙ্খলা বলতে অনেকে ইচ্ছাশক্তি বুঝিয়ে থাকেন। অর্থাৎ কোন কাজ কঠিন বা অপ্রীতিকর হলেও, তা সম্পন্ন না করা পর্যন্ত লেগে থাকাকেই আত্ম-শৃঙ্খলা বলে। যারা এতে ভালো করেন, তারা কাজ শুরু করার অনীহা কাটিয়ে উঠতে পারেন এবং বাঁধা-বিঘ্ন থাকলেও কাজে মন দিয়ে থাকতে পারেন। কিন্তু যাদের আত্ম-শৃঙ্খলা কম, তারা কাজ পিছিয়ে দেন বা প্রোক্যাস্টিনেট করেন এবং প্রায়ই কাজগুলো সমাপ্ত করতে ব্যর্থ হন, যদিও তারা খুব করে সেগুলো শেষ করতে চান।
সতর্কতা
সতর্কতা হলো কাজ করার আগে সম্ভাবনাগুলো নিয়ে ভাবা। যারা সতর্কতা স্কেলে বেশি নম্বর পেয়ে থাকেন, তারা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সময় নেন। অন্যদিকে, যারা কম নম্বর পেয়ে থাকেন, তারা অন্য কোনো উপায় বা তার ফলাফল না ভেবে, প্রায়ই যা মনে আসে তাই বলে দেন বা করে ফেলেন।